করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যরা।তবে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা সশরীরে নেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য মুহাম্মদ আলমগীর এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনলাইনে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এ জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মুনাজ আহমেদ নূরের নেতৃত্বে তৈরি করা সফটওয়্যারকে কাজে লাগানো হতে পারে।
তিনি নিউজবাংলাকে আরও বলেন, এ সপ্তাহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে ইউজিসিও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে। এরই মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. শহীদুল্লাহর কাছে পাঠানো হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় আগে থেকেই আলাদাভাবে পরীক্ষা নেবে বলে ঘোষণা দিয়ে আসছিল। আমরা বাকিদের সঙ্গে আলোচনা করব। তারা সম্মতি দিলে সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে।’
৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে তিনটি গুচ্ছ করা হয়েছে। কৃষি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং সাধারণ সায়েন্স ও টেকনোলজি নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার চিন্তা করা হচ্ছে।
এর আগে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি।
চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেহেতু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, সে ক্ষেত্রে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। ইউজিসিকে চিঠি দিয়েছি। আমরা আবারও সভায় বসব। আলোচনার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
এবার জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফল মূল্যায়ন করা হবে। তাতে ১৩ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করবেন।
ইউজিসি সদস্য দিল আফরোজা বেগম নিউজবাংলাকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে মঙ্গলবার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালগুলোর উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। এরপর এ সপ্তাহেই হয়তো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালগুলোর উপাচার্যদের নিয়ে অনলাইনে আরেকটি বৈঠক হবে।
এ ব্যাপারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় কী করবে, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে শুধু একটা লিখিত পরীক্ষার ভিত্তিতে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের মেধা মূল্যায়ন হতে পারে।’
শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ও অভিভাবকদের ব্যয় লাঘবের জন্য কয়েক বছর ধরেই সমন্বিত একটি পরীক্ষার মাধ্যমে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টা করছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আপত্তির কারণে তা সম্ভব না হওয়ায় গত বছর ইউজিসি কেবল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে নেয়।